May 8, 2024, 8:54 am

সংবাদ শিরোনাম :
চোরাচালান লাইনম্যান রুবেল আহমদ বেপরোয়া জমির ধান নষ্ট করে দিলো প্রতিপক্ষ: দিশেহারা কৃষক সিলেটে ইট ভাটা নিয়ে নজিরবিহীন কেঙ্ককারী বিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না : প্রধানমন্ত্রী সুজানগর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদের কমিটি গঠন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত মাওলানা লুৎফুর রহমানের মৃত্যু ”গুজব সংবাদ ফেসবুকে” বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত বিজিবির নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জোরালো ভূমিকা নিতে হবে সচিবদের :প্রধানমন্ত্রীর বইমেলা বাঙালি জাতিসত্তা দাঁড় করাতে সহায়ক : কবি নুরুল হুদা দুর্নীতি-অনিয়ম র অভিযোগে ডৌবাড়ী প্রবাসী কল্যাণ ট্রাস্টের ৪ সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী গোয়াইনঘাটের শীর্ষ কুখ্যাত চোরাকারবারী কালা মিয়া বিছানাকান্দি সীমান্তে অবৈধ পথে ঢুকছে ভারতীয় গরু :নেপথ্যে গোলাম হোসেন! বাদাঘাট মসজিদে ৫ লাখ টাকার অনুদান দিলেন সেলিম আহমদ এমপি রতনের আশীর্বাদ : যাদুকাটা গিলে খাচ্ছে রতন-মঞ্জু গোয়াইনঘাটে স্কুলের নামে প্রবাসীর জমি দখল গোয়াইনঘাটে এক শিবির নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ  সিলেটে শেখ হাসিনার প্রথম সফর স্মরণ করে আবহবিচ’র দু’আ মাহফিল শেখ হাসিনার সিলেট শুভাগমণের ৪৩ বছর সোমবার সিলেটে বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক এমপির আত্মার মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা নির্বাচিত সুনামগঞ্জের গোলাম আজম তালুকদার দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মোখা:‘পরিস্থিতি বুঝে’ এসএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নির্বাচনের ৪ দিন আগে নতুন যে প্রতিশ্রুতি দিলেন এরদোগান উত্তাল পাকিস্তান, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা জাহাঙ্গীরের মনোনয়নপত্র বৈধ বলার সুযোগ নেই আমি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘটত না: ট্রাম্প কী হচ্ছে, আর কী হবে তা সময়ই বলে দেবে: অপু বিশ্বাস
নরেদ্র মোদির নেতৃত্বে অন্ধকারের দিকে হাঁটছে ভারত

নরেদ্র মোদির নেতৃত্বে অন্ধকারের দিকে হাঁটছে ভারত

Please Share This Post in Your Social Media

 

 

আনিস আলমগীর
সাংবাদিক ও কলামিস্ট

ভারতের হরিদ্বারে হিন্দু সাধুদের একটি ধর্মীয় সমাবেশ থেকে প্রকাশ্যে মুসলিম নিধন ও গণহত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির বিজেপি সরকার এর বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রায় দুই সপ্তাহ হতে চললেও পুলিশ এখন পর্যন্ত একজন অভিযুক্তকেও গ্রেফতার করেনি। বরং মুসলিম নিধনের ডাক দিয়ে সাধুদের পুলিশের সঙ্গে গল্প করতে দেখা যাচ্ছে এবং এমন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। তারা দাবি করছেন, পুলিশ তাদের সঙ্গেই আছে।সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘটনায় রিস্ফোরণ হলে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের ওই ধর্ম সংসদ শেষ হওয়ার চারদিন পর পুলিশ একটি এফআইআর রুজু করে মাত্র একজনকে অভিযুক্ত করে- পরে তাতে আরও দুজনের নাম যোগ করা হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মিয়ানমারের মতো ভারতেও দেশের একটি জাতিগোষ্ঠীর লোককে নিঃশেষ করে দেওয়ার প্রক্রিয়া মাত্র।
গত ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ধর্মীয় নেতাদের বিশাল সমাবেশে ডানপন্থি কর্মী, কট্টর মৌলবাদী জঙ্গি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ‘ধর্ম সংসদ’ নামে একটি অনুষ্ঠানের জন্য একত্রিত হয়েছিল। তিনদিন ধরে এই ইভেন্টটি ঘৃণাত্মক বক্তৃতা, সহিংসতার জন্য সংগঠিত হওয়া এবং মুসলিমবিরোধী মনোভাবের একটি অকল্পনীয় ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে।
এই ইভেন্টে বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়ও উপস্থিত ছিলেন, যিনি এর আগে এমন একটি ইভেন্টের জন্য গ্রেফতার হয়েছিলেন, যেখানে তিনি মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান তুলেছিলেন এবং বিজেপি মহিলা মোর্চা নেত্রী উদিতা ত্যাগী এই অনুষ্ঠানটিকে রাজনৈতিক উৎসাহের স্তর দিয়েছেন।

২০১৪ সালের মে মাসে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিজেপির সরকার একের পর এক সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে এবং মুসলিম নিপীড়নমূলক আইন করছে। মুসলিম অধ্যুষিত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০ কোটি মুসলমানকে হত্যা করার হুমকির পর্যায়ে যাবে সেটা কল্পনার বাইরে ছিল। কিন্তু তা ঘটেছে এবং শাসক শ্রেণি তাতে কোনো প্রতিক্রিয়া না দিয়ে চুপ করে আছে।

মুসলমানদের পরই ওদের টার্গেট খ্রিষ্টান সম্প্রদায়। এক সপ্তাহ ধরে জোর করে খ্রিষ্টানদের হিন্দু ধর্মে আনা এবং চার্চে আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। ডেকান্ড হেরাল্ড, নিউইয়র্ক টাইমস, টিআরটি ওয়ার্ল্ডসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খ্রিষ্টান নির্যাতনের কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে পুলিশ জনতাকে সংগঠিত করে চার্চে হামলা চালিয়েছে এমন অভিযোগও আনা হয়েছে।

ভারতীয় মুসলমান এবং খ্রিষ্টানদের ক্ষেত্রে ভারত পিতৃভূমি কিন্তু পুণ্যভূমি নয়। তাদের পুণ্যভূমি জেরুজালেম বা মক্কা-মদিনা। এভাবে তারা হিন্দু বর্গভুক্ত নন। হিন্দুত্বের দাবি তাদের নেই। এভাবে কারা ভারতের চৌহদ্দির মধ্যে থাকবে আর কারা থাকবে না—তা হিন্দু মৌলবাদীদের নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকর নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদি এর আগে মহারাষ্ট্রের এক জনসভায় বলেছিলেন, সাভারকরের সংস্কার বা নৈতিক মূল্যবোধই ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। নরেন্দ্র মোদি সরকার হিন্দু মৌলবাদী সাভারকর এবং গোলওয়ালকারের সিদ্ধান্ত মতে ভারতকে পুনর্বিন্যাস করতে গিয়ে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী, নাগরিকপঞ্জি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী করতে গিয়ে তারা বাংলাদেশ-পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের নন-মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। এর মাধ্যমে মোদি সরকার ভারতের সেক্যুলার চরিত্রে কালিমা দিয়েছে, সংবিধান লংঘন করেছে, শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী এই তিন দেশে সূক্ষ্মভাবে সাম্প্রদায়িকতাকে আরও উসকে দিয়েছে।

এদিকে হরিদ্বারের ওই সমাবেশ থেকে যেভাবে মুসলিমদের হত্যার কথা বলা হয়েছে তাতে তাদের উদ্বেগ জানাতে পাকিস্তান মঙ্গলবার ইসলামাবাদে ভারতের দূতকেও তলব করেছে। পাকিস্তানে ভারতের সর্বোচ্চ কূটনীতিবিদ, ইসলামাবাদে ভারতীয় দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ারকে তলব করে ওই ঘটনায় পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং সেই উদ্বেগের বিষয়টি ভারত সরকারকেও জানাতে বলেন ভারতীয় কূটনীতিককে। তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে হরিদ্বারের ওই বিতর্কিত সমাবেশ নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

অবশ্য বিজেপির নেতারা কেউ কেউ শুধু বলেছেন, ওই ধর্মীয় সমাবেশের সঙ্গে তাদের বা সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। রাষ্ট্র যখন চুপ তখন এর আগে হরিদ্বারের ওই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ব্যবস্থা নিতেও আর্জি জানিয়েছেন প্রশান্ত ভূষণ, দুষ্যন্ত দাভে বা সালমান খুরশিদের মতো ভারতের শীর্ষ আইনজীবীরা।

বিবিসির রিপোর্ট অনুসারে, দেশের প্রধান বিচারপতিকে লেখা এক খোলা চিঠিতে ৭৬জন সিনিয়র আইনজীবী বলেছেন, এই গণহত্যার আহ্বানের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগের হস্তক্ষেপ খুব জরুরি- কারণ প্রশাসন কিছুই করছে না। তাদের মতে আদালতই এখন একমাত্র ভরসা। প্রধান বিচারপতি এনভি রামানাকে লেখা চিঠিতে অন্যতম স্বাক্ষরকারী রামাকান্ত গৌড় বলছিলেন, ‘আমরা এ হস্তক্ষেপ চাইতে বাধ্য হয়েছি কারণ সংবিধানের অন্য স্তম্ভগুলো- নির্বাহী বিভাগ বা রাজনৈতিক নেতৃত্ব সবাই একেবারে নীরব।’

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রগতিশীল নাগরিকরা প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন। হরিদ্বারের ওই সমাবেশের বক্তাদের বিদ্বেষপূর্ণ ভাষণের বিভিন্ন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, যাতে মুসলিমদের নির্মূল করতে সরাসরি অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এই ধর্ম সংসদের উদ্যোক্তা হচ্ছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর জন্য পরিচিত গাজিয়াবাদের বিতর্কিত হিন্দু সাধু ইয়তি নরসিংহানন্দ। সেই সমাবেশে সাধুসন্তরা যেভাবে প্রকাশ্যে মুসলিমদের ‘এথনিক ক্লিনসিং’ বা গণহত্যার ডাক দিয়েছেন, তা দেশের সংখ্যালঘুদের উদ্বেগের মধ্যে ফেলেছে। সেই সমাবেশে ‘হিন্দু রক্ষা সেনা’র প্রবোধানন্দ গিরি বলেছেন, ‘হিন্দুদের হয় মরার জন্য প্রস্তুত থাকতে হব- নইলে মরতে হবে।’ সাধ্বী অন্নপূর্ণা নামে একজন সন্ন্যাসিনী বলেন, ‘ওদের শেষ করতে হলে মারতে হবে- আমাদের একশ জন হিন্দু সেনা চাই যারা ওদের বিশ লাখকে খতম করতে পারবে।’

এদিকে বিশিষ্ট সাংবাদিক কারণ ধাপারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের প্রখ্যাত অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ বলেছেন, মোদি এটাকে পাত্তা দিচ্ছেন না কিন্তু ‘গণহত্যার আহ্বান’ দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদি মুসলিমদের গণহত্যা এবং জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা করা হয়, ভারতের মুসলমানরা পাল্টা লড়াই করবে। তখন আমরা আমাদের বাড়ি, আমাদের পরিবার, আমাদের সন্তানদের রক্ষা করবো। সাক্ষাৎকারে ধর্ম সংসদের সদস্যদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভাবছি তারা কি জানে কি না তারা কী বলছে? ২০ কোটি মানুষ পাল্টা আঘাত করবে। আমরা এখানকার অন্তর্গত, আমরা এখানে জন্মেছি এবং এখানেই থাকব।

নাসিরুদ্দিন শাহকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘নরেন্দ্র মোদির ভারতে একজন মুসলিম হয়ে থাকতে কেমন লাগে?’ তিনি বলেন, ‘মুসলিমদের প্রান্তিক করা হচ্ছে এবং অপ্রয়োজনীয় করা হচ্ছে। তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে নামিয়ে আনার প্রক্রিয়াধীন এবং এটি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঘটছে।’

সুত্র সংগ্রহ::জাগো নিউজ ২৪ প্রকাশ ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট। ইরাক ও আফগান যুদ্ধ-সংবাদ সংগ্রহের জন্য খ্যাত। anisalamgir@gmail.com





Calendar

May 2024
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031



  1. © সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2017 sylhet71news.com
Design BY Sylhet Hosting
sylhet71newsbd